trufy

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত লাইলি মজনুর ছবিটি ভুয়া

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বহুল প্রচারিত লাইলি মজনুর ছবিটি ভুয়া ।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে এমন , ‘আমরা সবাই কম বেশি, লাইলি মজনুর প্রেম কাহীনি শুনছি, কিন্তু অনেকে আমরা তাদের কল্পনা ভাবতাম কোনো ছবিতে ও দেখি নাই, এরাই হলো আসল লাইলি মজনু, ফ্রান্সের জাদু ঘরে এই ছবি এখনও রাখা আছে।’
যা সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন ।

ইতিহাসঃ
লাইলি — মজনুর প্রেমের উপখ্যান আমাদের প্রায় সবারি জানা। বিস্তারিত অনেকে না জানলেও , এই প্রেমিক—যুগলের নাম শুনে নি , আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে এমন লোক পাওয়া দুষ্কর ।

বাংলা পিডিয়ার তথ্যমতে,  লাইলি মজনু লেখা হয়  আনুমানিক ১৫৬০—১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দ সময়ের মাঝে । দৌলত উজির বাহ্রাম খানের প্রথম এই  রচনার পর তা প্রচুর জনপ্রিয়তা পায় । পরবর্তীতে আরও অনেকে এই একই বিষয় কাব্য রচনা করেন।

ঘটনা ব্যখা করতে গিয়ে ‘শেখ ফজলুল করিম’ তার ‘ লাইলি মজনু ’ বইতে লিখেন,  ‘আমিরের ছেলে কয়েস বাল্যকালে বণিক—কন্যা লায়লীর প্রেমে পড়ে। মজনু বা পাগল নামে খ্যাত হয় কায়েস। লায়লীও মজনুর প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করে। কিন্তু উভয়ের বিবাহে আসে বাধা। ফলে মজনু পাগল রূপে বন—জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে থাকে। অন্যদিকে লায়লীর অন্যত্র বিয়ে হলেও তার মন থেকে মজনু সরে যায় নি। তাদের দীর্ঘ বিরহজীবনের অবসান ঘটে করুণ মৃত্যুর মাধ্যমে। এই মর্মস্পর্শী বেদনাময় কাহিনী অবলম্বনেই লায়লী—মজনু রচিত।’
অবশ্যই , এই রকম আরও বিভিন্ন গল্প বা ব্যাখ্যা আছে এই গল্পের । তবে, সব গল্পের কাহিনীর উপসংহার একটিই ; আর তা হলো এই প্রেমিক যুগলের বিয়োগান্তক প্রেম কাহিনী ।

ফ্যাক্টচেকঃ
এই কাহিনীটি মূলত একটি আরব্য রূপকথা, যা ৭ম শতকের প্রেক্ষাপটে বেদুইন কবি কায়েস ইবনে আল মুল্লাওয়া ও লাইলি বিনতে মাহদীর মধ্যকার প্রেমের কাহিনীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। লাইলি—মজনুর এই প্রেমকথা বেদুইন জনপদে ৫ম শতাব্দী থেকেই প্রচলিত ছিল এবং এটি একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় গল্প হিসেবে সমাদৃত হয়। পরবর্তীতে, পার্সিয়ান কবি নাজামি এই অনন্য ভালোবাসার কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তা নিয়ে একটি মহাকাব্য রচনা করেন। তার এই মহাকাব্য বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়ে ‘লাইলি—মজনুর প্রেমকাহিনী’ নামে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, যা আজও প্রেমের প্রতীক হিসেবে বহুল পরিচিত।

লাইলি—মজনুর কাহিনি ৭ম শতকের আরবের বাসিন্দা কায়েস ইবনে আল মুলাওয়াহ এবং তার প্রেমিকা লায়লা আল আমিরিয়াকে কেন্দ্র করে লেখা আর অপরদিকে প্রথম ক্যামেরায় তোলা ছবিটি হলো ১৮২৬/১৮২৭ সালের দিকে যা তোলেন  Joseph Nicéphore Niépce নামের এক ফরাসি আবিষ্কারক । তাই সে হিসেবে, এই ছবিগুলো লায়লা—মজনুর হওয়ার প্রশ্নই উঠে না ।

আর দ্বিতীয়ত, ফ্রান্সের জাদুঘরে ‘Laila and Majnun in School”, Folio 129 from a Khamsa (Quintet) of Nizami of Ganja’ নামের হাতে আঁকা ছবি আছে কিন্তু সেখানে কোনও রকম ‘লাইলি—মজনু’র ফটোগ্রাফ নেই যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে ।

তথ্যসূত্রঃ
বাংলাপিডিয়া
লাইলি মজনু , শেখ ফজলুল করিম
The Met

Join Us as a Volunteer!

Are you passionate about promoting truth and making a difference? At Trufy.co, we’re building a community to fight misinformation and create a more informed society. By joining us, you’ll contribute to meaningful change, learn valuable skills, and be part of a supportive team dedicated to making the world a better place. Sign up today and help us spread the truth!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *